Tuesday, March 12, 2013

জীবন সত্য - স্বামী বিবেকানন্দ
সম্ভ্রান্ত বাঙালী পরিবারে ১২ই জানুয়ারী, ১৮৬৩ সালে জন্মেছিল একটি শিশু নরেন্দ্রনাথ নামে।
বিশ্বনাথ দত্ত পিতা ছিলেন উচ্চ ন্যায়ালয়ের এটর্নি, ভুবনেশ্বরী দাসী মাতা সতী সাধ্বী, ধার্মিক গৃহিনী।
প্রেসিডেন্সি ও স্কটিশ চার্চ কলেজ তাঁহার শিক্ষাস্থল, পশ্চিমী তথ্য, পশ্চিমী দর্শন বিজ্ঞান ও ইউরোপের নানান দেশের ইতিহাসের তাঁহার জ্ঞান অবিরল।
কেশবচন্দ্র সেন গঠিত ব্রহ্ম সমাজের সদস্যতা গ্রহণ করলেন এবার, প্রারম্ভিক শিক্ষা সেখান হতে ইশ্বর নিরাকার।
অসন্তুষ্ট দার্শনিক শিক্ষায়ে নানান চিন্তা মাথায়ে, ধর্ম ও ইশ্বরের অভিজ্ঞতা উন্নতির পথ কি ফোটায়ে।
বহু জ্ঞানী-গুনিকে জিজ্ঞাসা করলেন হয়েছে কি ইশ্বরের সাক্ষাত্কার, জবাব দিতে সকলে অক্ষম, মনে নিরাশা ও অন্ধকার।
ঠাকুর রামকৃষ্ণের খোঁজ পেয়ে গেলেন শেষে তাঁহার কাছে, জিজ্ঞাসা একই- মায়ের দর্শন পেয়েছো কি সচক্ষে নিজ কাছে।
জবাব এলো দেখেছি, জিজ্ঞাসা করলেন কেমন কোরে, ঠাকুর তখন বললেন তারে, যেমন দেখছি তোর তরে।
বহু তর্ক-বিতর্ক, যুক্তি-প্রশ্ন, শেষে শিস্যতা গ্রহণ করে ঠাকুরকে মানলেন নিজ গুরু, অপার জ্ঞান সঞ্চিত হলো, ধার্মিক শিক্ষার এটাই শুরু।
সাংসারিক সাজ ত্যাগ কোরে, গেরুয়া ধারণ করলেন সানন্দে, নরেন্দ্রনাথ পরিবর্তিত হলো স্বামী বিবেকানন্দে।
ঠাকুরের দেহত্যাগের পশ্চাত সন্যাসীদের সাহাযার্থে গঠন করলেন রামকৃষ্ণ মিসন ও রামকৃষ্ণ মঠ, দক্ষিনেশ্বর পুজাস্থল ও বিখ্যাত হলো বেলুর মঠ .
বিশ্ব ভ্রমন শুরু হলো জাপান ও চীন শহরে, নানান দেশ ভ্রমন করে পৌঁছালেন আমেরিকার শিকাগো শহরে।
আজও কি মোরা ভুলিতে পারি সেই বিশ্ববিখ্যাত ভারতীয় স্বামিজীকে, বিশ্বধর্ম সংসদে তাঁর সেই জ্ঞানের বাণীকে।
১৮৯৩এর সেই বিখ্যাত ভাষণ-" সিস্টার্স এন্ড ব্রাদার্স অফ আমেরিকা" আজও সারা বিশ্বে গুঞ্জিছে, জীবন দর্শনের সহজ উপায়ে তাহার বাণীতে সকলে সুনিছে।
নরেন্দ্র তোমার বাণী জীবন সত্যের জ্ঞান প্রদান করে আনন্দ, ঘর-সংসার ত্যাগ করিয়া তুমি হয়িলে স্বামী বিবেকানন্দ।

Tuesday, March 5, 2013

তুমি মোদের চিরদিন
ভুলেও কেনো ভুলিতে পারিনা তোমারে, আজও তোমার স্মৃতি নিদ্রা ভঙ্গ করে, হাথ ছানি দেয়ে আমারে।
এই অটুট জীবন-মরণের বন্ধন কি ছিন্ন করা যায়ে? প্রতি ক্ষণ, প্রতি মুহুর্তে, চলে আসে গুটি-গুটি পায়ে-পায়ে।
গত দুই দশক জীবনের চাকা কোথা হতে কোথা গড়িয়ে গেছে, মধুর জীবনের সেই ভগ্ন স্বপ্ন, আশা, ভাবি সুধু সব কিছুই মিছে।
জন কোলাহলে আমি কি আজ একা, অনেক পেয়েছি আশা-ভরসা আছে, কিন্তু চারিদিক ফাঁকা।
ভাই-বোন, বন্ধু, গুরুজন, আছে তাদের প্রীতি-ভালবাসা, কিন্তু এই একাকিত্বের ভার কে করিবে বহন, এ যে এক মরুত্রিষ্ণা।
সবাকার মাঝে নিজেকে বিলায়ে সে এক বিশেষ অনুভূতি, তোমা-বিনা দিক-দিগন্তে শুন্যের আভাস চাহে কি জীবন আহুতি।
পায়ে-পায়ে যত এগিয়ে যেতে চাহি, পিছু টানে সদা পুরানো স্মৃতি, জীবনের জ্ঞান তোমারিত দেন, প্রতি মুহূর্ত অমূল্য, প্রতি ক্ষণ শুরু, নেইকো তাহার ইতি।
তুমি বলেছিলে সুখ-দুক্ষ সব মাথা পেতে নিতে হবে, বাধা-বিঘ্ন পেরিয়ে জীবন যুদ্ধে সদা জয়ী হতে হবে।
সবই জানি, সবই বুঝি, এ অবুঝ মনকে কেমনে বোঝাই, তুমি নেই, ফিরে আসবেনা, এ প্রানের জ্বালা কেমনে সই।
অনেক কথা, অনেক ব্যথা, সঞ্চিত আছে এই মনে যুক্তিহীন, শুধু জানি তুমি ছিলে, তুমি আছ, তুমি থাকবে মোদের চিরদিন।

Thursday, February 28, 2013

প্রকৃত জীবন
কাল বৈশাখের ঝড় দুর্দান্ত আজ বাতাস, শান্ত শিথিল নহে প্রচন্ড রূপে আকাশ।
আবার দেখো আকাশে ঘন ঘটা, মেঘ ও বিদ্যুতের সে এক নব ছটা।
শ্রাবনে ঝরে ঝর-ঝর ধারা, পথ ঘাট সবই আজ জলে ভরা।
প্রকৃতির এই অশ্রু ভরা আঁখি, ধুয়ে-মুছে দিলো সব মলিনতা, স্বচ্ছন্দে উড়ে যায়ে মনের পাখী।
বসন্তের হাওয়ায় মন দোদুল দোলে, বৃক্ষ শাখে পুষ্প যেনো শিশু ক্রীড়া মায়ের কোলে।
কোথা গেলো ফুল,কোথা গেলো পাতা, সবই কি গেছে ঝোরে, একাকী আছো দাঁড়ায়ে বাঁচবে কেমোন কোরে।
মিষ্টি মধুর ফল, সুগন্ধে ভরা যৌবন, এইতো বৃক্ষের অমূল্য দান, ফুল পাতা বিনা বৃক্ষ যে শুন্য, নেইকো আজ কোনোই মান।
দান-প্রতিদান জীবনের আহবান, প্রাকৃতিক শোভা, গাহ আজি প্রাণ খুলে গান, কিছুই রবেনা, ধরা তাকে যাবেনা, থাকবেনা হৃদয়ের টান।
মনুষ্য জীবন প্রকৃতির আধীন, কভু হাঁসি, কভু কান্না দিন-প্রতিদিন, সকলে একা, সবই শুন্য, এ পৃথিবী অন্তহীন।
মিছে ছুটে যায়ে আঁধারের পিছু, যদি পায়ে সে মনি-মুক্তা কিছু, ঝলমল করে আভূষণ যত ক্ষনিকে হারায়ে মূল্যবান আছে যা কিছু।
মনস্চক্ষে দেখো প্রতি ক্ষণ প্রকৃতি দিতেছে ভূত, ভবিষ্যত, বর্তমানের আশা স্বপ্নের আভাস, প্রিকৃতির প্রেমে সদাই বহিবে জীবনে খুশির বাতাশ।
উন্মুক্ত আকাশে উড়ে যেতে দাও, খাঁচাএ বেঁধে রাখা নিষ্ফল, দু চক্ষু ভোরে দেখো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ভুলে সব দুক্ষ-ব্যথা, জীবন হবে সফল।

Sunday, February 10, 2013

বারো মাসে তেরো পার্বন
বঙ্গ আমার জননী আমার, ধাত্রী আমার, আমার দেশ, বাংলার গর্বে গর্বিত মোরা, মিষ্টি মধুর ভাবাবেষ।
বাংলার মাটি, বাংলার ধান, মনোমোহিনী বাউলের গান, সকাল-সন্ধে কাঁসর-ঘন্টা মায়ের পূজা নানা পরিধান।
খুশির হিল্লোল, উত্সবের প্লাবন, বারোটি মাসে তেরোটি পার্বন।
লুচি, পোলাও, ইলিশ, চিংড়ি, সঙ্গে আছে সন্দেশ ও পরমান্ন।
বৈশাখেতে নববর্ষ, বিশ্বকবির জন্মদিবস, জৈষ্ঠ মাসে জামাইষষ্টি, লোকনাথ বাবার তিরোধান দিবস।
আষাড় মাসে রথযাত্রা, বিপদ্তারিনি ব্রত, শ্রাবণ মাসে ঝুলন পর্ব, রাখি বন্ধন ভাই-বোনের ভালবাসার মত।
ভাদ্র মাসে ভরা নদী, মনশাদেবির পুজো, আশ্বিনেতে ঢাকের বাদ্দি, বিশ্ববিখ্যাত বাঙালির শারদোত্সব মা দুর্গার পুজো।
এইবার এলেন মা লক্ষী কোজাগরী রাত্রিতে, ধন-সম্পত্তি সঞ্চয় হোক, থাকো মা লক্ষী আমার ঘরেতে।
কার্তিক মাসে শ্যামাপূজা, দীপাবলী ঘরে-ঘরে, শক্তি দাও, রক্ষা করো, আলোকিত করো চারি ধারে।
অগ্রহায়ন মাসে পূজা মা জদ্ধাত্রীর, সঙ্গে আছে ইতু পূজা,পৌষ মাসে পৌষ-পার্বন, নবান্ন সহিত লক্ষী পূজা।
শীতকালের বিশেষ উত্সব বড় দীন বা ক্রিসমাস, পশ্চিমে হয় কেক-পার্টি, বাঙালির পিঠে-পুলির মাস।
মাঘ মাস শীতের শেষ, পূজা সিদ্ধেশ্বরী মা দুর্গার ভিন্ন বেষ।
কবিগুরুর শ্রীনিকেতনের প্রতিষ্ঠা দিবস, সুভাষচন্দ্র বোসের জন্মদিবস।
বসন্তের শোভা চারিধারে, মা সরস্বতী আসছেন ঘরে, সাদা হংস তোমার বাহন, হস্তে বীনা সাজছে কেমোন।
ভগবতী-ভারতী দেবী তুমি, তুমি শিক্ষা, তুমি জ্ঞান, ভক্তি দাও, সতবুদ্ধি দাও, করো তুমি বিদ্যা দান।
ফাল্গুন মাসে দোলযাত্রা, সাথে আছে রঙ্গের খেলা, শিব ঠাকুরের শিবরাত্রি উপলক্ষে শিবের পূজা বিরাট মেলা।
শেষ মাস বর্ষের চৈত্র বলে জানি, চড়ক পূজা, নীলযাত্রা, শিব ঠাকুরের চৈত্র গাজন মানি।
বৈশাখেতে নববর্ষ, বিশ্বকবির জন্মদিবস, জৈষ্ঠ মাসে জামাইষষ্টি, লোকনাথ বাবার তিরোধান দিবস।
আষাড় মাসে রথযাত্রা, বিপদ্তারিনি ব্রত, শ্রাবণ মাসে ঝুলন পর্ব, রাখি বন্ধন ভাই-বোনের ভালবাসার মত।
ভাদ্র মাসে ভরা নদী

Thursday, February 7, 2013

গান ও প্রাণ
গানের আসর ভরা সুর-তান, ছন্দে-ছন্দে নাচে মন-প্রাণ।
কখনো রৌদ্র কখনো বর্ষা, সব ভুলে গাও জীবনের গান।
আকাশ-পাতাল এক হয়ে যাক, বাজুক ঘন্টা সাথে জয় ঢাক।
শঙ্খধ্বনি গুঞ্জিছে গগনে, নব উল্লাসের সংকেত পবনে।
মন ময়ুরী পাখা মেলে ধরে, বৃক্ষ শাখটি পুষ্পে ভরে।
একা মন কোথা হারিয়ে যেতে চায়ে, শান্ত মধুর অনুভূতি এ এক হায়।
হৃদয় ভাবাবেগে সীমানা ছাড়ায়, চিন্তামগ্ন কেন হে পথিক রহিলে দাঁড়ায়।
ভাবনা-চিন্তা দুরে থাক আজি, গানের উপহারে ভরে নাও সাজি।
মন মোহে আজি সেতারের তার, তালে-তালে নাচে হৃদয় সবার।
টুং-টাং বাজে জলতরঙ্গ, কেঁপে-কেঁপে ওঠে অঙ্গ-অঙ্গ।
ঘন্টা-কাঁসর তবলা বাজে, রুনু ঝুনু ঝুন নুপুর বাজে।
সুরে-তানে ভেসে যাক প্রতিটি ক্ষন, থেমোনা বন্ধু চলাই জীবন।
মৃদু-মধুর সুরধ্বনিতে পৃথিবী আজি মগ্ন, এসেছে আজি শিবের ডমরুর পুণ্য এই লগ্ন।
জীবন আজি সুর-তাল গানে হলো নবীন সিঞ্চন, দুক্ষ-ব্যথা ধুয়ে মুছে গেল, ঝলমল যেনো কাঞ্চন।
চমত্কারী এই সুর-তালের কী করিব ব্যাখ্যান, তালে-তালে চলে হৃদয়ের গতি, সুরই জীবন, সুরই গান।

Wednesday, February 6, 2013


প্রাকৃতিক নিয়মাবলী
প্রাকৃতিক রূপ অতুলনীয়, অতীব সুন্দর, কল্পনাতীত অনন্ত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, সরত, হেমন্ত, শীত, বসন্ত।
বিভিন্ন রঙ্গের আভা প্রচ্ছদপটে অঙ্কিত, খুশির দলা দেয়ে মনে, রামধেনু রঙ্গে রঞ্জিত।
সাগরের জলে নীলের ছোঁয়া, পর্বত শিখরে শীত বাষ্পের ধোঁয়া।
বর্ষার জল ধুয়ে-মুছে দেয়ে সকলি কালিমা, বনে-জঙ্গলে সর্বত্র সবুজের লালিমা।
বৃক্ষ সাখে দোদুল দোলে নানা রঙ্গের পুষ্পের খেলা, যেন রঙ্গীন বস্ত্রে, আনন্দ মুখর ছোট্ট শিশুদের মেলা।
ভোরের আকাশে স্বর্ণ ঘটে সূর্য ছড়ায়ে আলো, নিদ্রা ত্যাগ,নব স্ফুর্তিতে জাগো, জীবনের পথ প্রদর্শক এই আলো।
রাতের আঁধার হোক না কালো, রজনীর মায়াভরা অনুভূতি, রৌপ্প চন্দ্রের মৃদু-মধুর এই নিশি আলো।
গ্রীষ্মের তেজ, শীতের আমেজ, সকলি প্রকৃতির দান, আনন্দ উপভোগ, ক্ষনিক যাতনা, এইতো জীবন জ্ঞান।
কাল বৈসাখির বহে ঝড়ো হাওয়া, ফাল্গুনে বৃক্ষের পাতা ঝরে যাওয়া।
অনর্থক জীবনের হিসাব-নিকাশ, রহিবেনা তো আর তোমার চাওয়া-পাওয়া।
প্রকৃতির মূলে একটি শিক্ষা, একটি লক্ষ্য, একটি নির্দেশ, কিছুই অক্ষুন্ন নহে, নহে অমর, যা হয়েছে শুরু, তা হবে শেষ।
প্রকৃতির অমূল্য দান, আঁচল ভোরে নাও, অমৃত করো পান, তৃষ্ণার্ত রহিবে না ক্ষুদিত পাষান, আশ্চর্য প্রকৃতি, নিস্সার্থ তোমার এ দান।